আসসালামু আলাইকুম। আমার প্রিয় পাঠক বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আজ আমি অন্য রকম একটি গল্প নিয়ে আপনাদের কাছে এসেছি। যে গল্পটি পড়লে আপনার মনের ভিতর আলাদা আগ্রহ জন্ম নেবে। আর সকালের এই অভ্যাস আপনাকে বদলে দেবে। সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠার নিয়ম, সকাল সকাল ঘুম, সারা দিনের রুটিন সহ সকালের অভ্যাস গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
সকালের অভ্যাস গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
আমরা যখন সকাল আট টা পর্যন্ত ঘুমিয়ে থাকি। এলার্ম বন্ধ করে আবার ঘুমানোর চেষ্টা করি এ রকম সকালের অভ্যাস করা ঠিক না। ঠিক ঐ সময়েই, পৃথিবীর ৯০% সফল মানুষ তাদের সারা দিনের অর্ধেক কাজ সম্পন্ন করে ফেলে। এই সব সফল মানুষের লিস্ট এ অমিতাভ বাচ্চান থেকে আমেরিকার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বারাক ওবামা পর্যন্ত পড়ে।
বন্ধুরা আজকে আমি আপনাদের বলবো, সকালের এমন কিছু নিয়ম আর এমন একটা গোপন টেকনিক, যা আপনাদের লাইফে প্রয়োগ করলে আপনি সফল হবেনই হবেন। এই নিয়ম গুলো আমরা নিয়েছি রবিন শর্মা এর বেস্ট সেলার বই, ”দ্যা ফাইভ এ এম” ক্লাব থেকে। তাহলে চলুন শুরু করা যাক সকালের অভ্যাস সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা।
সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠা
১। এবার কথা হলো যদি আমরা ভোর ৫ টার সময় উঠেও যাই, তাহলে আমরা কি করবো তাই তো? ”দ্যা ফাইভ এ এম” বই অনুযায়ী প্রথমে আমাদের ২০ মিনিট ব্যায়াম করা উচিত। ব্যায়াম করার ফলে আমাদের ফোকাস বাড়ে। আমাদের এনার্জি লেভেল বেড়ে যায়। সকালের এই অভ্যাস টা সকলের করা উচিত।
সকালে ব্যায়ামের কারনে আমাদের শরীর থেকে বি ডি এন এফ নামক হরমোন নিঃসৃত হয়। এই হরমোন এর ফলে আমাদের হতাশা কমে যায়। আমাদের সাফল্যের ক্ষুধা বাড়ে। আর এটা বৈজ্ঞানিক মতে প্রমানিত যে বি ডি এন এফ হরমোন এর ফলে আমাদের ব্রেনের নিউরন এর কার্যক্ষমতা অনেক বেড়ে যায়।
সারা দিনের রুটিন তৈরি
২। আপনি পরের ২০ মিনিট মেডিটেশন করতে পারেন। এবং তার সাথে সাথে সারা দিনে কি কি কাজ করবেন তা আপনি লিখে রাখতে পারেন। সারা দিনের মধ্যে কোন কাজটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ তা আপনি নোট করতে পারেন। আপনার জীবনের কি কি লক্ষ্য আছে, তা লিখতে পারেন। বা আপনি জীবনে কি কি অর্জন করতে চান, তা লিখতে পারেন।
৩। এবার আপনি পরবর্তী ২০ মিনিট আপনার ফিল্ড এর সম্পর্কে যেকনো ধারণা নিতে পারেন। কোন ভালো বই পড়ে জ্ঞান নিতে পারেন। কোন ভালো ভিডিও দেখে কোন কিছু শিখতে পারেন। এভাবে সেলফ মোটিভেটেড বই পড়া অভ্যাস করুন ।
এভাবে যখন আপনি এক বছর এই নিয়ম চালিয়ে যাবেন তখন দেখবেন বছর শেষে আপনি ১২২ ঘন্টা ব্যায়াম করেছেন। ১১২ ঘন্টা আপনি মেডিটেশন করেছেন । আর আপনার লক্ষ্যকে খাতার মধ্যে লিখে আরো মজবুত করেছেন। ১১২ ঘন্টা কোন জ্ঞানের বই পড়েছেন। তাই আমিও মনেকরি, সকালের এই অভ্যাস গুলো আপনিও করতে পারেন।
অনেকে আছেন যারা ঘুম কে কোন কাজ এর মধ্যে রাখে না। এমন তো নয় যে মানুষ ঘুম ছাড়াই সারা দিন রাত কাজ করতে পারে। আগামিকাল কাজের জন্য আজকে ঘুম দরকার। আজকের রাতের ঘুম ই বলে দেবে আপনি আগামিকাল কি পরিমান কাজ করতে সক্ষম। সে জন্য আমাদের রাতের ঘুম খুবিই গুরুত্বপূর্ণ।
কিন্তু আজকের দিনে বেশিরভাগ মানুষ এর ই পরিপুর্ণ ঘুম হয় না। এর প্রধান কারন হচ্ছে মোবাইল ফোন। মোবাইল হতে বের হওয়া রেডীয়েশন এর ফলে আমাদের ব্রেনের মেলোডিনিন হরমোন নিঃসৃত হয়। যার ফলে আমাদের ঘুম ভাল হয় না। আর আমরা তার পরের দিন ক্লান্ত অনুভব করি। ভালো মত কাজে মনযোগ দিতে পারি না। এজন্য ঘুমানোর কমপক্ষে ১ ঘন্টা আগে আপনারা মোবাইল কে নিজের কাছ থেকে সরিয়ে রাখবেন। যাতে আপনার রাতের ঘুম ভালো হয়।
সেলফ মোটিভেটেড
নানা ধরনের সেলফ ইম্প্রুভমেন্ট সম্পর্কিত বই পড়ে আমরা আমাদের পুরোনো ধারনা বদলাতে পারি। এতে আমাদের চিন্তা শক্তি আরো শক্ত হবে। আমাদের নেয়া সিদ্ধান্ত গুলো হবে অনেক যুক্তিযুক্ত। এর মাধ্যমে আমাদের মাইন্ড সেট আরো শক্তিশালী হবে। আমাদের এই শক্তিশালী মাইন্ড সেট কোন কাজের নয়, যদি না আমরা আমাদের ইমোশন কে বুঝতে পারি।
যদি না আমাদের রিলেশন কে ঠিক না রাখতে পারি। আবার রিলেশন ও মাইন্ডসেট কোন কাজের নয়, যদি না আমারা আমাদের স্বাস্থ্য ঠিক না থাকে। আর সে জন্য আমাদের শরীরের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। বলা হয় যে স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। শরীর ঠিক থাকলেই তবেই আপনি কিছু করতে পারবেন। কিন্তু আপনার শরীর যদি ঠিক না থাকে তাহলে কোন কিছুই আপনার মনে বসবে না।
সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠার নিয়ম
রবিন শর্মার মতে আপনাকে সকালে উঠতে হলে ৬৬ দিনের প্রয়োজন। তার মধ্যে সকালের অভ্যাস নিজের মধ্যে আনতে হলেও আপনাকে কমপক্ষে ৬৬ দিন তো লাগবেই। তার মধ্যে প্রথম ২২ দিন আপনি যখন সকাল ৫ টায় উঠতে চাইবেন আপনার মনে হবে যে আরো ঘুম পারি। হয়তো প্রথম ২২ দিন আপনি কালকে কালকে করে কাটিয়ে দিতে পারেন। পরের ২২ দিন আপনি উঠতে চেষ্টা করবেন।
তখনোও আপনি ৫ টায় উঠবেন নাকি কয়টায় উঠবেন তার ঠিক নেই। কিন্তু পরের ২২ দিন এ আপনি ইচ্ছা করলেই সকাল ৫ টায় উঠতে পারবেন। এর পর সকালের অভ্যাস গুলো আপনার মধ্যে যুক্ত হয়ে যাবে। তখন আপনিই ভাববেন যে মানুষ এত দেরি করে কেমন করে উঠে। আপনি যদি এই নিয়ম মানতে পারেন তাহলে আপনি দ্যা ফাইভ এ এম ক্লাব এর সদস্য হয়ে যাবেন।